পরিভাষা
প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে ব্যবহৃত ভাষা ও পরিভাষা বা শব্দাবলী দেশ ও সংস্কৃতিভেদে ভিন্ন হতে পারে। যে কারণে আপনার কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের সাথে কাজ করার সময় কোন ভাষা ও পরিভাষা ব্যবহার করবেন সেটা তাদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া ভালো। তবে, সাধারণ নিয়ম হলো "পারসন-ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ" ব্যবহার করা যেখানে ব্যক্তিকে তার অসুস্থতার (শারীরিক অবস্থা) আগে স্থান দেয়। অর্থাত্ ব্যক্তির মর্যাদা ও তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে কথা বলে, যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন (সিআরপিডি)-এর সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এটি প্রতিবন্ধিতার অধিকারভিত্তিক মডেলের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, প্রতিবন্ধিতা হলো একজন ব্যক্তি যিনি প্রতিবন্ধী তার সাথে সমাজ সৃষ্ট বাধাগুলোর ইন্টারঅ্যাকশনের/ মিথস্ক্রিয়ার প্রতিফলন।
যার সহজ মানে হলো আমরা যখন কথা বলব কিংবা কোথাও লিখব তখন "প্রতিবন্ধী" শব্দের পরিবর্তে লিখব "একজন ব্যক্তি যিনি প্রতিবন্ধী", কিংবা "একজন শিক্ষার্থী যিনি অন্ধ", "একজন নারী যার ফিস্টুলা রয়েছে", "একজন ব্যক্তি যিনি হুইলচেয়ার ব্যবহার করেন", কিংবা "হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী"। কেন লিখব? লিখব কারণ প্রতিবন্ধিতা একজন ব্যক্তির অনেকগুলো পরিচয় বা বৈশিষ্ট্যের একটি মাত্র দিক তুলে ধরে। তাই আমরা যদি শুধু "প্রতিবন্ধী" কিংবা "পঙ্গু" কথাটি ব্যবহার করি তাহলে সেটা ব্যক্তির অবস্থা বা প্রতিবন্ধিতাকে তুলে ধরে এবং সেটা আসলে ওই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে তুলে ধরে না বা প্রকাশ করে না।
আরো পরামর্শ দেয়া হয় যে, যখন কারো অসুস্থতা কিংবা রোগ সম্পর্কে কিছু বলা হবে তখন যেন প্রচলিত ধ্যান ধারণা বা কোন বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে কথাগুলো না বলা হয়। বরং রোগ দ্বারা রোগীকে চিহ্নিত না করে রোগীর একটি রোগ আছে সেটা বলতে হবে; যেমন ডায়াবেটিক রোগী না বলে তার ডায়াবেটিকস আছে সেটা বলতে হবে।